বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকারীদের সব ধরনের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে ছাত্রলীগ বা কী জানি না, অপরাধী অপরাধীই। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, এ নৃসংসতা কেন? এই জঘন্য কাজ কেন? এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতরকমের উচ্চ শাস্তি আছে সেটা দেয়া হবে। গতকাল বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ সংবাদ সম্মেলন হলেও আবরার হত্যা এবং ক্যাসিনো ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা বাচ্চা ছেলে, ২১ বছর বয়স। তাকে হত্যা করা হলো। মারা হলো পিটিয়ে পিটিয়ে। কী অমানবিক! পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা দেখেছি। সব ইনজুরি ভেতরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি কোনও অপরাধ করে, সে কোন দল করে, কী করে, তা আমি দেখি না, অপরাধী অপরাধীই। বুয়েটে এই ঘটনা যখন ঘটে, সকালে শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলাম আলামত সংগ্রহ করতে, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে। ছাত্ররা নামার আগেই আমরা তৎপরতা শুরু করি।

কে ছাত্রলীগ বা কী জানি না। অপরাধী অপরাধীই, অন্যায়কারীর বিচার হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি তো বলেছি, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোথায় কে ছিল সব কয়টাকে গ্রেপ্তার করতে। তবে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার পর সেটা আনতে দেবে না। আমার মনে প্রশ্ন দেখা দিলো, এটা কেন? হত্যাকারীদের কেউ কি এর মধ্যে আছে যে ফুটেজ প্রকাশিত হলে তাদের পরিচয় বের হয়ে যাবে কিনা। পরে তারা ফুটেজ নিয়ে আসলো এবং কর্তৃপক্ষকে একটা কপি দিয়ে আসলো। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আন্দোলন কীসের জন্য। বিচার তো হবেই। যে মা সন্তান হারিয়েছেন, যে বাবা সন্তান হারিয়েছেন তাদের যে কষ্টটা কী সেটা আমি বুঝি। একটা সাধারণ পরিবারের ছেলে, একটা ব্রিলিয়ান্ট ছেলে। তাকে কেন হত্যা করা হলো। তিনি বলেন, ২০০১ সালে আমাদের নেতাকর্মীদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মারা হতো এমনভাবে যাতে বাইরে থেকে বোঝা যেত না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত কত হত্যা হয়েছে। ছাত্রদল বুয়েটে টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে সনিকে হত্যা করেছে। ওই বুয়েটে আমাদের কত নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমরা কারও কাছে বিচার পেয়েছি? ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমি চেষ্টা করেছি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে তার দুই সফরের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন।