রাজধানীর কাকরাইলে ‘ভূইয়া ম্যানশন’ ছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের
সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের কার্যালয়। সেখানেই থাকা-খাওয়াসহ রাত্রিযাপন
করতেন আলোচিত-সমালোচিত এই যুব নেতা। ওই কার্যালয়ে সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক
নেতাকর্মী থেকে শুরু করে তাকে ব্যবহার করে সুবিধাভোগকারী প্রভাবশালী
মন্ত্রী-এমপিদের ভিড় লেগেই থাকত।
এমনকি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকেরই যাতায়াত ছিল ওই
কার্যালয়ে। মাঝে মধেই দেখা যেত চলচ্চিত্র জগতের তারকাদেরও। তবে
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের দু-এক দিন পর থেকে ওই কার্যালয় ফাঁকা হতে শুরু
করে। সম্রাটকে গ্রেফতারের পর গতকাল ওই কার্যালয় শূন্য ছিল প্রায়। এতদিনের
সুবিধা ভোগকারীদের সবাই হয়ে যান লাপাত্তা।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে
আলোচনায় আসে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের নাম। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীমকে গ্রেফতারের পর
সম্রাটকে গ্রেফতারের জোর দাবি ওঠে। কয়েকদিন আগেও সম্রাট কাকরাইলের
কার্যালয়ে অবস্থান নেন। সে সময় নিচে কয়েকশ নেতা-কর্মী পাহারায় বসেন। গত এক
সপ্তাহ আগে কাকরাইলের কার্যালয় ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে যান সম্রাট।
সে সময়ে কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী ছাড়া সংগঠনের নেতা-কর্মীদের তেমন ভিড়
চোখে পড়েনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সম্রাটের সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন
দেশে সফরসঙ্গীর আভাস ছিল না। তাকে ব্যবহার করে সুবিধা নিতে অনেক এমপি, নেতা
এসে আড্ডা দিতেন সম্রাটের অফিসে। কিন্তু তার বিপদে এসব সুবিধাবাদীদের কেউ
এখন পাশে নেই।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর গতকাল র্যাবের হাতে গ্রেফতার
হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে যখন গ্রেফতার হন তখন তার একমাত্র সঙ্গী ছিলেন
সংগঠনের সহসভাপতি এনামুল হক আরমান। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সম্রাটের
পক্ষে আইনজীবী ধরাসহ আইনি প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ
যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান মাকসুদ। অন্যদিকে সহসভাপতি
মুরসালিন আহমেদ গাঢাকা দিলে তিনিও আদালত পাড়ায় উপস্থিত হয়ে আইনজীবীদের
সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।