আগামী বছর শুরুর দিন দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বইয়ের পাশাপাশি দুই হাজার টাকা। শিক্ষার্থীদের স্কুলের পোশাক কেনার জন্য এ অর্থ দেওয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন আজ শনিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যালয় গুলিকে দৃষ্টি নন্দন ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। আকর্ষণীয় করে সাজানো হচ্ছে ক্লাস রুম। আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান নিশ্চিত করতে সরকারের এতসব আয়োজন।

আজ কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের স্বপ্নকুঁড়ি সম্মেলন কক্ষে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পে যারা দুর্নীতি করছে তারা কেউ মাপ পাবে না। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। মনে রাখবেন প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। মেধাবী জাতি গঠনে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দোয়া হচ্ছে। কারণ আজকের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২০৪১ সালে যুবক হবে। যারা নেতৃত্ব দেবে উন্নত রাষ্ট্রের।
জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বদরুল হাসান বাবুল, রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক আবদুল ওহাব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবীব, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ, তৌফিকুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, লস্কর আলী প্রমুখ। সভায় জেলার সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী উপজেলা ইনস্ট্রাক্টর, ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টর, পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর, উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পিটিআই সুপারসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী আজ বিকেলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এক শিফটের বিদ্যালয়ের সময়সূচির (ক্লাস রুটিন) উদ্বোধন করেন। এ বিদ্যালয়ে এখন থেকে সকাল ৯টা ৩০মিনিটে শরীরচর্চা ও ১০টা ক্লাস শুরু হবে। ৪৫মিনিট ক্লাস করবার পর ১৫মিনিট বিরতি। এ সময় শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের খেলার ছলে পড়াবেন। আর ছুটি হবে বিকাল ৩টা ৪৫মিনিটে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আনন্দপূর্ণ পাঠদান কার্যক্রম চালু করার লক্ষ্যে পরীক্ষা মূলক ৪টি স্কুল বাছাই করা হয়েছে। স্কুলগুলো হলো কুড়িগ্রাম পৌরসভার ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নেত্রকোনার ৩৬ নম্বর বালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাগুরা জেলার হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সফলতা পেলে সকল বিদ্যালয়ে একই সময় সূচি চালু করা হবে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা ৩০মিনিটের বিশ্রামের সময় পাবেন। প্রতি ক্লাসের শেষে ১৫মিনিটের বিশ্রামের সময়ে খেলার ছলে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় দিবস পালনের জন্য সরকার এই প্রথম (১৫ আগস্ট উপলক্ষে) সকল বিদ্যালয়কে অনুষ্ঠান বাবদ দুই হাজার টাকা দিয়েছে। আগামী বছর থেকে এ টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে পাঁচ হাজার টাকা করা হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল প্রতি পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এরপর প্রতিমন্ত্রী রাজারহাট চাকিরপশার তালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। এখানে রাজারহাট উপজেলাকে শতভাগ স্কাউট উপজেলা ঘোষণা করা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে উদ্বোধন করা হয় বাতিঘর কর্মসূচি।