ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিজ বাড়ি থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।
সিরাজুল ইসলামের বাড়ি কাটাখালি পৌরসভার শ্যামপুর গ্রামে। তিনি কাটাখালি আদর্শ কলেজের শিক্ষক। গত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি কাটাখালি পৌরসভার মেয়র প্রার্থী ছিলেন। এ ছাড়া তিনি শ্যামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
কাটাখালি থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী নিজের গাড়িতে করে আদর্শ কলেজের এক ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। এরপর ওই ছাত্রী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ছাত্রীর অভিযোগ পেয়ে রাতেই নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কাটাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কাটাখালি আদর্শ কলেজের এক ছাত্রী থানায় এসে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মামলা করেন। সে মামলায় রাতেই তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিএনপি নেতাদের দাবি, ষড়যন্ত্র করে সিরাজুল ইসলামকে ফাঁসানো হয়েছে। রাজশাহী জেলা বিএনপির আরেক সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি শ্যামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে মেয়র আব্বাসের সঙ্গে সিরাজুলের দ্বন্দ্ব হয়। এর জেরেই তাঁকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ জুলাই শ্যামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মেয়র আব্বাস আলী ও অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচনে আটটি পদেই সিরাজুল ইসলামের প্যানেল জয়ী হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটে ওই স্কুলের সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। মেয়র আব্বাস তাঁর পক্ষের একজনকে সভাপতি করার জন্য সিরাজুল ইসলামকে প্রস্তাব দেন। কিন্তু সে প্রস্তাবে সিরাজুল রাজি হননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। এ কারণে ভোটের এক মাসের বেশি সময় পার হলেও সভাপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।