বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ৬ কিশোরকে শিশু কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় মামলার পরবর্তী তারিখ ১৮ই সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে আদালত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিদের হাজির করা হলে আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী এ আদেশ দেন।

এ সময় আদালত চত্বরে আসামিদের ঢোকানো এবং গাড়িতে ওঠানোর সময় রিফাত হত্যার অন্যতম আসামি রিশান ফরাজী চিৎকার করে বলেন, সুনাম দেবনাথ আমাদের লিডার, সুনাম দেবনাথই আমাদের নির্দেশদাতা, সে কেন আসামি হয়নি, তাকে কেন আসামি করা হলো না।

রিশান ফরাজি আরও বলেন, মিন্নি কেন সাত নম্বর আসামি? রিশান ফরাজি বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে এবং চার্জশিটভুক্ত এক নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীর ছোট ভাই। যে সুনাম দেবনাথের কথা রিশান ফরাজী চিৎকার করে বলেন, সেই সুনাম দেবনাথ হচ্ছেন বরগুনা-১ আসনের বর্তমান সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

রিফাত হত্যাকা-ের তদন্ত এবং এরপর রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতা, সঙ্গে মাদক ব্যবসা জড়িত থাকার অভিযোগ পুরো ঘটনাকে ভিন্ন এক মাত্রা দেয়। অভিযোগ ওঠে, বড় কিছু আড়াল করতেই পেছন থেকে ক্ষমতাশালীরা কলকাঠি নাড়ছেন। আরও অভিযোগ রয়েছে, নয়ন বন্ড নামে বরগুনাবাসীর কাছে পরিচিত সেই সাব্বির আহম্মেদ ওই শহরে একটি গ্যাংয়ের নেতা, যাদের মদদ দেন এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথ।
যদিও এর আগে গণমাধ্যমে দেয়া একাধিক সাক্ষাৎকারে পিতা ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং পুত্র সুনাম দেবনাথ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে সুনাম দেবনাথ বলেন, রিফাত হত্যাকা- এবং এ হত্যাকা-ে জড়িতদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। কখনো ছিলও না। আমি এ হত্যাকা-ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এমন একটি আলোচিত হত্যাকা-ে জড়িত থাকলে কারোরই রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় জড়িত থাকলে আমিও রেহাই পেতাম না। সকল অভিযুক্তরাই রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ হত্যাকা-ে আমি জড়িত না থাকায় স্বীকারোক্তিতে আমার নাম কেউ বলেনি। কিন্তু চার্জশিট দাখিলের পর অভিযুক্তদের আমার বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য ষড়যন্ত্রমূলক। একটি মহল আমার বাবা ও আমার সম্মান ক্ষুণ  ও হয়রানি করতে অভিযুক্তদের প্ররোচনা দিচ্ছেন।