শনিবার মাঝরাতে চাঁদে অবতরণ করার কথা ছিল ভারতের নভোযান চন্দ্রযান-২-এর। কিন্তু চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার আগেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে নভোযানটির দুটি অংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে কারণে ভারতের এই অভিযানের সাফল্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) এক কর্মকর্তা বলেছেন, দুটি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও ভারতের অভিযান ব্যর্থ হয়নি। এ অভিযানের মাত্র ৫ শতাংশ ব্যর্থ হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, চন্দ্রযান-২-এর দুটি অংশ ‘ল্যান্ডার’ বিক্রম ও ‘রোভার’ প্রজ্ঞানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে পুরো অভিযানের মাত্র ৫ শতাংশ ব্যর্থ হচ্ছে। তবে বাকি অংশ ‘অরবিটার’ এর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। অরবিটারটি চাঁদের কক্ষপথে সফলভাবে কাজ করছে। এর মাধ্যমেই অভিযানের ৯৫ শতাংশ প্রত্যাশা পূরণ হবে।
ইসরোর সেই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ল্যান্ডারের ভেতর যে রোভার ছিল, সেটির কার্যক্ষমতাই ছিল মাত্র ১৪ দিনের। ১৪ দিন পর এমনিতেই সেটি কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলত। অপর দিকে চাঁদের কক্ষপথে স্থাপিত অরবিটারটির কার্যক্ষমতা টিকে থাকবে পুরো এক বছর। এই এক বছর ধরে বিভিন্ন কোণ থেকে চাঁদের ছবি ইসরোতে পাঠাতে থাকবে অরবিটারটি। হারিয়ে যাওয়া ল্যান্ডারটির ছবি তুলে সেটির অবস্থান শনাক্ত করার ব্যাপারেও সহায়তা করবে অরবিটার, এমনটিও জানিয়েছেন সেই কর্মকর্তা।
গত ২০ আগস্ট সফলভাবে অরবিটারকে চাঁদের কক্ষপথে স্থাপন করে চন্দ্রযান-২। অরবিটারটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে সেই কর্মকর্তা বলেছেন, অরবিটারটি স্বাভাবিকভাবে তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদের কক্ষপথে এটি একদম নিরাপদে আছে।
এদিকে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে চন্দ্রযান-২-এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) জানিয়েছে, গত ৬০ বছরে চাঁদে চালানো বিভিন্ন দেশের অভিযানগুলোর মধ্যে ৪০ শতাংশই ব্যর্থ হয়েছে। নাসার ‘মুন ফ্যাক্ট শিট’-এর তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, গত ৬০ বছরে চালানো ১০৯টি অভিযানের মধ্যে ৬১টি সফল হয়।
শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৫৫ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তে অবতরণের কথা ছিল চন্দ্রযান-২-এর। কিন্তু একদম কাছাকাছি গিয়ে বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নভোযানটির। স্থানীয় সময় শনিবার রাত ২টা ২০ মিনিটে ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানান, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে চলছিল ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া। তারপর আর কোনো সংকেত পাঠায়নি ল্যান্ডার বিক্রম।